Header

রেণু থেকে রোজিনা হওয়ার গল্প

রেণু থেকে রোজিনা হওয়ার গল্প


আশি ও নব্বই দশকের পর্দা কাঁপানো অভিনেত্রী রোজিনা। কবরী, শাবানাদের পাশাপাশি রূপালি পর্দায় আলো ছড়িয়েছেন রোজিনা। 


দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।  উপহার দিয়েছেন তিনশ'র বেশি সিনেমা, যার বেশিরভাগই ব্যবসা সফল।


রূপালি পর্দার রোজিনা বাস্তবের রেণু। তার নাম রওশন আরা রেণু।  তবে কীভাবে রেণু থেকে রোজিনা হয়ে গেলেন তিনি? তার নেপথ্যের কাহিনী এবার জানালেন এ নায়িকা।


তিনি জানান, সিনেমার নায়িকা হতে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন ঢাকায়।  এরপর নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তিনি নিজেকে নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।

Buy Laptop >> Dell Inspiron AIO 22 3280 8th Gen All in One PC

স্মৃতির সেই ঝাঁপি খুলে দিয়ে সাংবাদিকদের জানান রেণু থেকে রোজিনা হওয়ার গল্প।


রোজিনা বলেন, ‘আমার জন্ম রাজবাড়িতে। শৈশবের বেশিরভাগ সময় গোয়ালন্দে নানা বাড়িতে কেটেছে। স্কুলে পড়াশোনা করেছি রাজবাড়িতে। সেই বাড়ির পাশেই চিত্রা সিনেমা হল ছিল। সন্ধ্যার শো দেখতে যেতাম। স্কুলে যাওয়ার পথে সিনেমার মাইকিংয়ের পেছনে দৌড়াতাম। টিফিনের টাকা জমিয়ে বান্ধবীদের নিয়ে সিনেমা দেখার পরিকল্পনা করতাম। মা অবশ্য পছন্দ করতেন না। মাকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য বলতাম, বান্ধবীর বাসায় রাতে থাকব।


এভাবেই সিনেমা দেখা চালিয়ে যেতেন রোজিনা।  একসময় নিজেকেই কবরী, শাবানার জায়গায় স্বপ্ন দেখা শুরু করেন।


রোজিনা বলেন, ‘শাবানা ম্যাডাম, কবরী ম্যাডামদের সিনেমা দেখে ভাবতাম, আমিও একদিন সিনেমা করব। আলী ভাই নামে আমাদের এক পরিচিতজন ছিলেন ঢাকায়; মঞ্চ নাটক করতেন। চলচ্চিত্রের অনেকের সঙ্গে তার পরিচিত ছিল। আলী ভাইকে একবার বলেছিলাম, আমি সিনেমায় অভিনয় করব।  কিন্তু আমার মায়ের ভয়ে তিনি সায় দিতেন না। বলতেন, ‘খালাম্মা মারবে’।’


রোজিনা জানান, একদিন ঠিকই মায়ের বেদম পিটুনি খেলেন।  রাজবাড়ি থেকে পালিয়ে এলেন ঢাকায়।  সোজা গিয়ে উঠলেন আলী ভাইয়ের বাসায়। 


রোজিনা বলেন, ‘ঘটনাটা ১৯৭৭ সালের। মা ভেবেছিল, আমি গোয়ালন্দে গেছি।  তারা সবাই আমাকে হন্যে হয়ে খুঁজল।  নানাবাড়িসহ কোথাও না পেয়ে অস্থির হয়ে উঠেন মা। পরে খবর পেলেন, আমি ঢাকায়। মা চলে আসলেন ঢাকায়। মাকে দেখে আমি খাটের নিচে পালাই। আলী ভাইয়ের মা কোনো মতে মাকে বোঝালেন।  মা রাজবাড়ি চলে আসেন।’

Job Circular >> যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ


এ সময়েই অভিনয়ের সুযোগ আসে রোজিনার।


তিনি জানান, ‘ওই সময় আলী ভাইদের মঞ্চনাটকের মহড়া চলছিল। নাটকের শো’র দুদিন আগে নায়িকা অসুস্থ হয়ে যান।  আলী ভাই বললেন, ‘তুই নাটকটা কর’।  মাত্র দুই দিন রিহার্সেল করে লালবাগের শায়েস্তা খান হলে শো করেছিলাম।

নাটকের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলের (মায়া) বিজ্ঞাপন করে পরিচিতি পেলাম।’


ঢাকাই চলচ্চিত্রে সুযোগের সেই স্মৃতিচারণ করলেন রোজিনা।


বললেন, ‘সংসদ ভবনের পাশে খেজুর বাগানে ‘জানোয়ার’ নামে একটি সিনেমার দৃশ্যধারণ চলছিল। পরিচালক ছিলেন কালিদাস বাবু। ওয়াসিম সাহেব হিরো ও সুচরিতা ম্যাডাম হিরোইন ছিলেন। শুটিং দেখতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, টেবিলে বসে নর্তকীরা নৃত্য করছে। পরিচালকের সহকারী আমাকে বললেন, ‘এই মেয়ে আসো তো। একটা শট দাও’। 


আমি হতভম্ব হলাম। পরে আমি খুব আগ্রহ নিয়ে গেলাম। শার্ট-প্যান্ট পরিয়ে দিয়ে মেকআপ করিয়ে দিল। ফ্লোরে রিহার্সেল দিল। এক মিনিটের মধ্যে একটা শট দিয়েছিলাম। পরে ড্রেস পরিবর্তনের পর আমাকে পারিশ্রমিক হিসেবে ১০ টাকা দেওয়া হয়েছিল। ১০ টাকা পেয়ে হতভম্ব হয়েছিলাম, আমরা তো ঘুরতে এসেছি। শুটিং করতে আসিনি। আমি আর জিজ্ঞাসা করিনি। আমি আমার প্রথম উপার্জন নিয়ে গর্ববোধ করি।


সেই সিনেমার ক্যামেরাম্যান আমার কিছু ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবিগুলো কীভাবে কীভাবে যেন অনেকের কাছে গিয়েছিল।


এরপরই সিনেমায় নায়িক চরিত্রে কাজ পান রোজিনা।


তিনি বলেন, ‘‘রাজমহল’ সিনেমায় একক অভিনেত্রী হিসেবে আমার রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে। তখন রেণু নামেই অভিনয় করেছিলাম।


পরে ‘মিন্টু আমার নাম’ সিনেমায় অভিনয়ের সময়ে মহিউদ্দিন স্যার আমার নাম দিলেন রোজিনা। এর মধ্যে ‘আয়না’ নামে আরেকটি সিনেমা করছিলাম মশিউর সাহেবের। সেখানে আমার নাম দেওয়া হয়েছে শায়লা। তখন আমার কিছু বলার ছিল না।


পরে মিন্টু আমার নাম’ সিনেমার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে করে বলা হলো, আমার নাম রোজিনা। সিনেমার গল্পের চরিত্রের নামও রাখা হল রোজিনা। যেন পপুলার হয়। পরে মহড়া চলল।তারপর থেকে রোজিনা নামেই পরিচিতি পেলাম।

No comments

অভিনয়ে অনবদ্য ভুমিকা তারিন

  অভিনয়ে অনবদ্য ভুমিকা তারিন।। 

Powered by Blogger.